রহস্যময় আলুটিলা আর নয়নাভিরাম রিসাং




এপ্রিলের এক রৌদ্রময় সকালে বেড়িয়ে পড়লাম পার্বত্য চট্টগ্রামের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের লীলাভূমি খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে। সঙ্গে আমার সবসময়কার ভ্রমণ সঙ্গী বন্ধু মুসা আহমেদ, সাকিব হোসেন আর আবদুর রউফ। শিক্ষাজীবন চট্টগ্রামে হওয়ায় এদের সঙ্গে চষে বেড়িয়েছি চট্টগ্রাম আর পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় সব জায়গায়। এবার খাগড়াছড়ি ভ্রমনে আমাদের মূল গন্তব্য ছিলো আলুটিলা আর রিসাং ঝর্না।

বাস স্ট্যান্ডে গিয়েই পড়লাম বিপাকে। সকাল সকাল পৌঁছুলেও বাস মিস করলাম। কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা জানালো দু’ঘন্টার আগে আর কোন গাড়ি নেই। আমাদের তো মাথায় হাত! কারণ রাতেই আবার চট্টগ্রাম ফিরে আসতে হবে । উপায়ন্তর না দেখে চড়ে বসলাম লোকাল বাসে। আর এখানেই ভুলটা করে বসলাম। রীতিমত যুদ্ধ করে বাসে সিট দখল করতে হলো। একে তো মানুষের উপচে পড়া ভীড়। তার উপর বাসের পেছনের সিটে বসায় ঝাকি খেতে খেতে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। তবে মাটিরাঙ্গা পৌঁছানোর পর অবস্থা পাল্টে গেলো। পথের দু’ ধারের মনকাড়া রূপ আস্তে আস্তে আমাদের ক্লান্তির অনেকখানিই প্রশমিত করে দিলো। সারি সারি উঁচু পাহাড় আর জুম ক্ষেত পেছনে ফেলে আমাদের বাস ছুটে চলেছে। আর আমরা একেকজন হারিয়ে গেলাম মায়াবী এক জগতে। কিছুক্ষণ পর আমাদের বাসটি উঁচু-নীচু রাস্তায় গিয়ে পৌঁছুলো। হঠাৎ বাসটি একবার খাড়া উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে তো এই আবার বিপদজনকভাবে নেমে আসছে। কিছু কিছু জায়গায় দেখলাম সেতুর আগে ঝুঁকিপূর্ণ সতর্ক নির্দেশ দেওয়া। খাগড়াছড়ির পথে পথে এরকম প্রচুর ছোট ছোট ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতু চোখে পড়ে।

বাসের হেল্পারকে আগেই বলে রেখেছিলাম আলুটিলা নামিয়ে দিতে। তিন ঘন্টার বাস জার্নিটাকে চার ঘন্টা বানিয়ে খাগড়াছড়ি শহরের প্রায় ছয় কি.মি. আগে বাস নামিয়ে দিলো আমাদের গন্তব্যস্থল আলুটিলায়। অনেকেই হয়তো জানেন আলুটিলা বিখ্যাত তার রহস্যময় সুড়ঙ্গের কারনে। আমাদেরও ব্যাপারটা আগে থেকেই জানা ছিলো। তাই আলুটিলায় নেমেই আমাদের মধ্যে একটা অ্যাডভেঞ্চার অ্যাডভেঞ্চার ভাব চলে এলো। পাঁচ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ঢুকে পড়লাম। প্রবেশ মুখেই দেখতে পেলাম পর্যটকদের আকর্ষণ করতে আলুটিলা কর্তৃপক্ষের সাইনবোর্ড। অনেক খানি হেঁটে আর প্রায় শ’খানেক ধাপ সিড়ি ভাঙ্গার পর গিয়ে মিললো সুড়ঙ্গ মুখের দেখা। বন্ধু রউফ মোবাইল টর্চের আলোতে সুড়ঙ্গের ভেতর ঢুকে পড়লো। তবে কিছুদূর গিয়েই বোঝা গেলো এরকম ঘুটঘুটে অন্ধকারে সুড়ঙ্গ জয় সম্ভব নয়। তাছাড়া কোন কারন ছাড়াই গা ছম ছম করছিলো। তাই আবার ফিরে গিয়ে মশাল কিনে আনলাম। সুড়ঙ্গের পথ কিছুটা কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল। তলদেশে প্রবাহমান ঝর্না। মাথার উপর ঘুটঘুটে অন্ধকারে বাদুড়ের কর্কশ চিৎকার। পাহাড়ের নীচে খুব সাবধানে মশাল নিয়ে সুড়ঙ্গের ভেতর যেতে হয়। এভাবে মিনিট দশেক যাওয়ার পর পাওয়া গেলো সুড়ঙ্গের অপর প্রান্ত। বেশ একটা অ্যাডভেঞ্চার হয়ে গেলো ভাব নিয়ে আমরা মনোযোগ দিলাম মশাল হাতে ফটোসেশনে।


এ সিড়ি বেয়ে নিচে নামলেই আলুটিলা সুড়ুঙ্গ







মশাল হাতে ফটোশেসন

আলুটিলা সুড়ঙ্গ জয় (!) শেষে আমরা বেরিয়ে এলাম। আলুটিলার উল্টোপাশেই রয়েছে আবাসিক হোটেল ‘ইমাং’। পাহাড়ের উপর অবস্থিত এ হোটেল থেকে খাগড়াছড়ি শহরটিকে ছবির মতো সুন্দর দেখায়। ইমাংয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আমরা রওয়ানা হলাম রিসাংয়ের উদ্দেশ্যে। আলুটিলা থেকে প্রায় দেড় কি.মি. আগে রিসাং। সেখান থেকে ঝাড়া সোয়া দুই কিলো হাঁটা পথ । সমতল পথ নয়, জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ী পথ। যাওয়ার সময় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি সঙ্গী হওয়ায় হেঁটে যেতে তেমন কষ্ট হলোনা। কিন্তু ফেরার সময় প্রচন্ড রোদ থাকায় পাহাড়ী রাস্তায় চলতে চলতে আমাদের দম বের হওয়ার জোগাড়। স্থানীয়দের কাছে রিসাং ঝর্না ‘তেরাংতৈ কালাই ঝর্না’ নামে বেশি পরিচিত। আর মারমা ভাষায় ‘রিসাং’ মানে পাহাড় থেকে পানি পড়া।

রিসাং যাওয়ার পথে আদিবাসীদের ঘর-বাড়িগুলো চোখে পড়ার মত। বেশিরভাগ বাড়িই পাহাড়ি মাটির তৈরী। দেখতে চমৎকার। স্থানীয় একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো মাটির তৈরী হলেও বাড়িগুলো যথেষ্ট মজবুত। জানা গেলো, ওখানে টিপরা বা ত্রিপুরার অধিবাসীদের বাস।

হাঁটতে হাঁটতে পেয়ে গেলাম সিড়ির দেখা। কয়েকশো ধাপ। কিছু ধাপ পেরোতেই শুনতে পেলাম পাহাড় থেকে অনবরত জল পতনের ধ্বনি। বুঝে গেলাম রিসায়েংর খুব কাছে চলে এসছি। আরো কিছুটা নামার পর দেখা পাওয়া গেলো যৌবনবতী রিসাংয়ের। সিড়ির শেষ ধাপটি পেরিয়ে আর কাদাময় পিচ্ছিল পথ আর ছড়াটা অনেকটা দৌড়ে রিসাংয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। চোখ জুড়িয়ে গেলো, মন ছেয়ে গেলো প্রশাস্তিতে। আর দেরি করলাম না। কাপড়চোপড় নিয়েই আমরা নেমে পড়লাম ঝর্নার পানিতে শরীর জুড়াতে। দুঃসাহসী কয়েকজনকে দেখলাম ঝর্নার ঢালু অংশ থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে নীচের ছড়ায় পড়ছে। ব্যাপারটা আনন্দদায়ক সন্দেহ নেই কিন্তু বিপদজনকও বটে। রিসাংয়ে গিয়ে আমাদের কারোরই ফিরতে মন চাইছিলো না।


এ সিড়ি বেয়ে নিচে নামলেই রিসাং ঝর্না

রিসাং ঝর্না

রিসাং থেকে বাসে করে খাগড়াছড়ি শহরে গিয়ে পৌঁছালাম। রিসাংয়ের মায়াবী রূপ আমাদের আবার বাস মিস করিয়ে দিলো। শহরে পৌঁছে জানলাম বিরতহীন শেষ বাসটি মাত্রই ছেড়ে গিয়েছে। শেষ লোকাল বাসটি আর মিনিট বিশেক পর ছাড়বে। টিকিট কেটে তড়িঘড়ি করে কিছু খেয়ে নিলাম। ক্লান্ত বিধ্বস্ত শরীর নিয়ে বাসে উঠে দেখি আমাদের সিটে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একজন লোক বসে আছে। মাটিরাঙা পর্যন্ত তার স্ত্রী আর সন্তানকে বসতে দিতে লোকটি আমাদের অনুরোধ করলো। কী আর করা! ক্লান্ত বিধ্বস্ত শরীরে প্রায় অর্ধেকটা পথ বাসে দাঁড়িয়ে থাকলাম।
খাগড়াছড়িতে গেলে ফেরার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন জরুরী। পাহাড়ি রাস্তায় কোন দুর্ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য সন্ধ্যার পর বাস চলাচল করতে দেওয়া হয়না। পার্বত্য চট্টগ্রামের সব জায়গাতেই সন্ধ্যার আগেই শেষ বাসটি ছেড়ে যায়।

যেভাবে যাবেন
একদিনের ভ্রমণ হওয়ায় খাগড়াছড়ি শহরটি খুব ভালো করে দেখার সুযোগ হয়নি। তবে বাস থেকে শহরটিকে মনে হয়েছে ছিমছাম সাজানো গোছানো। খাগড়াছড়ি যেতে চাইলে ঢাকা থেকে যেকোন এসি বা নন-এসি পরিবহনে যাওয়া যাবে। এসি পরিবহন স্টারলাইনের ভাড়া ৪০০ টাকা। আর শ্যামলী, এস আলম সহ বিভিন্ন নন-এসি পরিবহনের ভাড়া ৩০০ টাকা। ট্রেনে গেলে প্রথমে চট্টগ্রাম নামতে হবে। তারপর যেতে হবে বাসে। চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে পাওয়া যাবে বিরতিহীন বাস ‘শান্তি’। ভাড়া ১৪০ টাকা। যেতে লাগবে তিন ঘন্টা। রিসাংয়ের কাছাকাছি থাকার জায়গা হচ্ছে পর্যটন মোটেল । আর আলুটিলার কাছে হচ্ছে হোটেল ইমাং। এছাড়া শহরে বিভিন্ন দরের হোটেল পাবেন। হেঁটে না গিয়ে জিপ বা চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করেও রিসাং যেতে পারেন। তবে প্রকৃতির দুর্গমতাকে জয় করে সৌন্দর্য উপভোগ করার মজাটা কিন্তু একবারেই আলাদা।

যাবেন বগা লেক আর কেওক্রাডাং ?


# ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবন যাওয়ার বাস রয়েছে। এছাড়া ট্রেনে করে চট্টগ্রাম পৌঁছে সেখান থেকে বাসে করে চট্টগ্রাম যেতে পারবেন। চট্টগ্রাম থেকে গেলে বহদ্দারহাট থেকে বাসে চড়তে হবে। ভাড়া ৭০ টাকা। সময় লাগবে প্রায় আড়াই ঘন্টা।

# বান্দরবন পৌঁছানোর পর রিকশা/টমটম করে চলে যাবেন রুমা বাস স্ট্যান্ডে। সেখান থেকে কাইক্ষ্যংঝিরি যাওয়ার বাসে চড়বেন। ভাড়া ৭০ টাকা। চাঁদের গাড়ি রিজার্ভ করেও যেতে পারবেন। ভাড়া পড়বে দুইহাজার টাকার মত। আরো বেশিও লাগতে পারে। কাইক্ষ্যংঝিরি পৌঁছুতে সময় লাগবে আড়াই থেকে তিন ঘন্টা। পাহাড়ী রাস্তা হওয়ায় এসব জায়গায় সন্ধ্যার পর কোন বাস চলাচল করেনা। ক্ষেত্র বিশেষে চাঁদের গাড়ি চলাচল করে। তবে সেটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই দিন থাকতেই কাইক্ষ্যংঝিরি চলে যাওয়া উত্তম।

# কাইক্ষ্যংঝিরি নেমে সাঙ্গু নদী পার হওয়ার জন্য চড়তে হবে নৌকায়। ভাড়া মাথাপিছু ত্রিশ টাকা। সময় লাগবে এক ঘন্টার মতো।

# নৌকা করে পৌঁছে যাবেন রুমা বাজারে। সেখানে হোটেল হিলটন সহ কমদামি কিছু হোটেল পাবেন। রাত কাটানোর জন্য যে কোন একটায় উঠে পড়তে পারেন। হোটেল ভাড়া মৌসুমের উপর নির্ভরশীল। তবে তা খুব বেশি নয়। বর্ষায় হোটেল হিলটনে এক রাত কাটানোর জন্য আমরা তিন বেডের একটি রুম পেয়েছিলাম মাত্র আড়াইশো টাকায়।

# রুমা বাজার পৌঁছে প্রথম কাজ হচ্ছে গাইড ঠিক করা। রুমা বাজার থেকে বগা লেক বা কেওক্রাডং বা আরও দূরে গেলেও দিনপ্রতি গাইড ভাড়া তিনশত টাকা। তাছাড়া গাইড আপনার সঙ্গে থাকাকালীন তার যাবতীয় খরচ আপনাকেই বহন করতে হবে। বিভিন্ন পর্যটন অফিস সেনাবাহিনীর রেজিস্টার্ড গাইড সরবারহ করে। আপনি সেখান থেকে গাইড নিয়ে নিবেন। সাধারনত সিরিয়ালে যে গাইড থাকে তাকেই নিতে হয়। পাহাড়ী গাইড পেলে ভালো। বাঙ্গালী গাইডের ব্যাপারে সাবধান থাকবেন। এরা টাকা-পয়সা নিয়ে বাটপারী করতে ওস্তাদ। সবচেয়ে ভালো আপনার আগে গিয়েছে এমন কারো কাছ থেকে পাহাড়ী গাইডের মোবাইল নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করে তাকে ভাড়া করা। আমি বাটপার একটা বাঙ্গালি গাইড পাওয়ায় এ ব্যাপারে তেমন কোন সহায়তা করতে পারছিনা বলে দুঃখিত।

# পরদিন ভোরে বগা লেক রওয়ানা হওয়ার আগে অবশ্যই সেনাবাহিনীর কাছে আপনার নাম ঠিকানা নিবন্ধন করে নিবেন।

# বগা লেক চাঁদের গাড়ি করে যেতে পারবেন। রিজার্ভ গাড়ি ১৫০০ টাকা। আর মৌসুমের সময় লোকাল গাড়ি পাওয়া যায়। মাথাপিছু ভাড়া ১০০ টাকা। বর্ষায় গাড়ি করে যাওয়ার পরও কিছুটা পথ হাঁটতে হয়। সময় লাগবে প্রায় দেড় ঘণ্টা।
আর যদি হাঁটতে চান তবে দু’টো পথ। গাড়িতে যাওয়ার পথেই হাঁটতে পারেন। সময় বেশি লাগবে, ঝুঁকি কম আর তেমন কোন সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন না। আর একটা আছে ঝিলের পথ বা ঝিরিপথ। এ পথে হাঁটলেই বগা লেক যাওয়ার আসল মজাটা পাবেন। প্রায় পঞ্চাশবারেরও বেশি ঝর্ণা আর ঝিলের পথ পার হতে হবে। সময় লাগবে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা। এ পথে সামান্য ঝুঁকি আছে। তবে অ্যাডভেঞ্চারেই যখন বেরোবেন তো একটু ঝুঁকি না নিলে কী চলে??:P

# বগা লেক ও কেওক্রাডাং যাওয়ার জন্য কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে নিতে পারেন। দলের সবাই ঘাড়ে একটি করে ব্যাগ নিবেন। ব্যাগ যথাসম্ভব হালকা হওয়া ভালো। ব্যাগে প্রয়োজনীয় ঔষধ পাতি যেমন পেইনকিলার, স্যাভলন, স্যালাইন, ব্যান্ডেজ ও কিছু শুকনা খাবার ইত্যাদি নিয়ে নিবেন। ছোট বোতলে পানি নিবেন। আরেকটি ছোট বোতলে গ্লুকোজ বা স্যালাইন বানিয়ে রাখতে পারেন। পানি নিয়ে চিন্তা করবেন না। পথে এত এত ঝর্ণা পাবেন যে বোতল ফুরোলেই পানি ভরে নিতে পারবেন। অনেকটা পথ হাঁটতে হবে তাই রুমা বাজার থেকে রবারের জুতো কিনে নিবেন। মোজা নিয়ে যাবেন। বেশ ভালোই কাজে দিবে জুতোগুলো। দাম পড়বে ১০০-১৫০ টাকা।

# এ জায়গাগুলোতে যাওয়ার প্রধান দুই আতংকের নাম মশা ও জোঁক। জোঁক থেকে বাঁচার জন্য ব্যাগে লবণ রাখবেন। আর মশা থেকে বাঁচার জন্য চট্টগ্রাম বা ঢাকা থেকে ‘অডোমস’ কিনে নিবেন। রুমা বাজারেও অডোমস পাবেন।অভিযানের শুরুতে সবাই ‘অডোমস’ শরীরে মেখে নিবেন। প্রায়ই এ অভিযানে গিয়ে অনেকে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়। মাঝে সাঝে সাঁপের দেখাও পেতে পারেন। তবে শীতকালে গেলে সাপ আর জোঁকের ভয় একবারেই কমে যায়। (এ প্রস্তুতি না নিলেও তেমন ক্ষতি নেই। তবে সতর্কতা অবলম্বন করা ভালো)

# বগা লেক পৌঁছে এক রাত ওখানে থাকতে পারেন। ঐদিনই কেওক্রাডং যাওয়ার শারীরিক শক্তি সাধারনত থাকার কথা নয়। তাছাড়া সন্ধ্যা হয়ে গেলে যেতেও পারবেন না।

# বগালেকে সিয়াম দিদি অথবা লারামের রেস্ট হাউজে উঠবেন। মনে রাখবেন যে রেস্ট হাউজে উঠবেন সেখানেই খাবেন। এত খরচ কম হবে।

# পরদিন ভোরে কেওক্রাডাং রওয়ানা হবেন। যেতে লাগবে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা। ফিরতে দুই ঘন্টা। এখানে জোঁকের ভয় একটু বেশি। কিন্তু বগা লেকের চেয়ে রাস্তা কম ঝুঁকিপূর্ণ।

# রুমা বাজার ফেরার সময় আবার হেঁটে হেঁটে ফিরতে পারেন। চাইলে চাঁদের গাড়ি করেও ফিরতে পারেন। সেজন্য গাইডকে বলবেন চাঁদের গাড়ি ঠিক করতে।

আরেকটা বিষয় খরচাপাতি মৌসুমের উপর নির্ভরশীল। যদি চাঁদের গাড়ি করে না যান তবে সব মিলিয়ে মাথাপিছু দেড়হাজার টাকার বেশি লাগার কথানা।
শীতকালে কিওক্রাডাং যাওয়া সব দিক থেকে নিরাপদ। তবে বর্ষায় মজা বেশি।
আজকাল শীতকালে বগা লেক ও কেওক্রাডং পর্যন্ত সরাসরি চাঁদের গাড়ি যায়। সেভাবেও যেতে পারেন